ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগীর বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি টাকা লুণ্ঠন করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। অন্যথায় সারাদেশে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সভা করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ব্রয়লার মুরগীরসহ নিত্যপণ্যের কারসাজিতে দায়িদের শাস্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে সরকারের প্রতি এ দাবি জানান ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ।
এ সময় ক্যাবের অন্যান্য সদস্য এবং সাধারণ ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগীর বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের পকেট কেটে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শুনেছি প্রতিযোগিতা কমিশনে সিন্ডিকেট তৈরিকারী কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে মামলার মেরিট কোন দিকে যাচ্ছে, ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আমার চাই প্রতিযোগিতা কমিশনের এ বিষয়ে পরিস্কার করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগীর সিন্ডিকেট যারা করেছে তাদের নাম সরকারের কাছে পৌঁছেছে। এখন সরকারের সদিচ্ছা যদি থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
নাজের হোসাইন বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই, যারা ব্রয়লার মুরগীরসহ নিত্যপণ্যের কারসাজিতে দায়ি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। প্রতীকি মামলা দিয়ে যেন পার পাইয়ে দেওয়া না হয়।’
হুশিয়ার দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মানববন্ধনের পর যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয় তবে ক্যাবের পক্ষ থেকে সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন করা হবে।’
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘এই রমজান মাসে সংযম করার কথা, কিন্তু তারা তা না করে ভোক্তাদের পকেট কেটে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা ক্যাবের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, যারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কষ্টের টাকা লুণ্ঠন করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগী বাংলাদেশের বাজারে অনেকের চেহারা উন্মোচন করে দিয়েছে। জাতীয় ভোক্তা -অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর আগে প্রমাণ করে দিয়েছে একটি ব্রয়লার মুরগীর উৎপাদন করতে কতো টাকা খরচ হয় এবং বাজারে কতো টাকা বিক্রি হয়। এই একটা ঘটনার মধ্যে দিয়ে কি পরিমাণ টাকা লুটপাট হয়েছে তা আমরা বুঝলাম। সরকারের সংস্থায়ই এটা প্রমাণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগীর আড়ালে চিনি সিন্ডিকেট আড়াল হয়ে গেল, ব্রয়লার মুরগীর আড়ালে বড় বড় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আড়াল হয়ে গেল। তাদের অনেকেই ব্রয়লার মুরগী নিয়ে আজ কথা বলছেন কিন্তু নিজের লুটপাটের কথা বলছেন না। আমি পরিস্কার বলতে চাই- রমজান মাসে মানুষকে কষ্ট দিয়েন না। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
-এসআর/এসএম