ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বিশ্বের প্রায় ৫২টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয় বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারে এক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান। এর আগে তিনি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। মৎস্য রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণ ও এর যথাযথ ব্যবহারে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, সমুদ্রে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে আইন করেছিলেন। সেই আইনের ওপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্রসীমায় অধিকার অর্জনের কাজ শুরু করেন। সমুদ্রসীমায় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা সরকার ছাড়া আর কোনো সরকার পদক্ষেপ নেয়নি।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেরা কূটনৈতিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ আয়তনের সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি। সে সমুদ্রসীমায় সম্পদ আহরণ ও তার গুণগত ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে এ বিষয় নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
সরকার গবেষণায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সর্বত্র গবেষণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে মৎস্য সম্পদে আমূল পরিবর্তন এসেছে। মৎস্য উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করা সম্ভব হয়েছে। সরকারের সময়োপযোগী ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত ও পৃষ্ঠপোষকতায় এটা সম্ভব হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাত সমন্বিতভাবে সামনে এগিয়ে যাক। বেসরকারি খাতকে সহায়তা করার জন্য সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মৎস্যখাতে বিএফআরআইয়ের গবেষণা সাফল্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সমুদ্রে মাছের মজুত নিরূপণে গবেষণা জাহাজ আরভি মীন জরিপ পরিচালনা করছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রচলিত ও অপ্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন এবং সংরক্ষণে বিএফআরআই গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ আহরণে সরকারের উদ্যোগে জাহাজ আনা হচ্ছে। এভাবে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকার যে পর্যায়ে যা কিছু সহযোগিতা দরকার তা করছে।
সমুদ্র সম্পদ আহরণে সরকারের সব প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতের কাজের মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার বলে মনে করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের সমুদ্রে যে অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ রয়েছে তার আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে। এর ব্যবহার ও বিপণন কীভাবে করা যায় সেটাকে গবেষণার অংশে পরিণত করতে হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।