ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: কিশোর-তরুণদের নেশাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানির নতুন মরণাস্ত্র ‘ই-সিগারেট’ নিষিদ্ধে পদক্ষেপের জন্য অন্তবর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনতিবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারীর দাবি জানিয়েছে অর্ধশতাধিক তামাকবিরোধী সংগঠন।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
প্রত্যাশা’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিটিএফকে’র গ্রান্টস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া, ডাস’র টিম লিড আমিনুল ইসলাম বকুল, উন্নয়ন সমন্বয়’র হেড অব প্রোগ্রাম মো. শাহিন-উল-আলম, অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের প্রকল্প সমন্বয়ক শরিফুল আলম, টিসিআরসি-ডিআইইউ এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ফারহানা জামান লিজা, মানস’র প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত, নারী মৈত্রী’র প্রকল্প সমন্বয়কারী নাসরীন আক্তার, হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর ডা. অরুনা সরকার, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহার প্রমুখ।
কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মী আবু রায়হান।
বক্তারা বলেন, ই-সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিধায় ৪২টি দেশে এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি, সরকারের তরফ থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকায় ই-সিগারেট (ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম) অন্তর্ভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সময়োপযোগী এ পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাকের নতুন মরণ ফাঁদ থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু, মুনাফালোভী কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠি ই-সিগারেট সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কূট-কৌশলের মাধ্যমে সরকারের শুভ উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করছে। শুধুমাত্র মুনাফার লোভে তারা কিশোর-তরুণদের হাতে মরণ-পণ্য তুলে দিচ্ছে। মৃত্যু সওদাকারিদের অপচেষ্টার ঘোর বিরোধীতা এবং ধিক্কার জানাই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ই-সিগারেটকে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট অনুযায়ী, ই-সিগারেট ব্যবহারে হার্ট এট্যাক, স্ট্রোক ও ফুসফুসের ক্ষতির কারণ। জাপানে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুন বেশি ক্ষতিকর। হংকং কাউন্সিল অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেটে যে সকল উপাদান পাওয়া গেছে, সেগুলো শরীরের বিভিন্ন সেল বিকল করে দেয় এবং পরবর্তীতে ক্যান্সারে রুপ নেয়।
ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণের (ই-লিকুইড) মধ্যে থাকে প্রোপেলিন গ্লাইকল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইকল, নানাবিধ ফ্লেভার ও নিকোটিন। এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ইতোমধ্যেই ৪২টি দেশ ই-সিগারেটকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ এবং আরো ৫৬টি দেশ ই-সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এ জন্য ই-সিগারেট ব্যবসায়ীদের অপকৌশলে বিভ্রান্ত না হয়ে অনতিবিলম্বে দেশে ই-সিগারেট বন্ধের প্রজ্ঞাপন জারী করার জোর দাবি জানাই।
এবি