ভোক্তাকণ্ঠের রাকিব আর নেই

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট : কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ডিজিটাল প্লাটফর্ম ভোক্তাকণ্ঠের সংবাদ কর্মী ইমরান হোসেন রাকিব (২৭) আর নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের সময় তার মৃত্যু হয় বলে তার পারিবারিক সূত্র জানায়।

খুলনার বয়রা এলাকাতেই রাকিবের পরিবারের বসবাস। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে রাকিব ছিলেন মেজ। তার বাবা আমীর হোসেন অবসরপ্রাপ্ত সেটেলমেন্ট অফিসার।ঢাকায় তিনি বন্ধুদের সঙ্গে মোহাম্মদপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ইমরান হোসেন রাকিবের প্রথম নামাজে জানাজা খুলনার সোনাডাঙ্গায় শুক্রবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তার পরিবার দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছে। পরে সেখান থেকে রাকিবের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার পৈত্রিক বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। সেখানে জুমার নামাজ শেষে তাকে দাফন করা হবে।

ভোক্তাকণ্ঠ কর্মী রাকিবের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভুইয়া রাকিবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, আমরা একজন নিষ্ঠাবান কর্মীকে হারলাম।

মাল্টিমিডিয়া সংবাদ কর্মী রাকিবের মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্যাবের মুখপাত্র ভোক্তাকণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. সাজেদুল ইসলাম বলেন, সৃজনশীল, মেধাবী ও প্রাণচঞ্চল রাকিবের মৃত্যু সংবাদ মাধ্যমের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

রাকিবের ভগ্নিপতি শেখ সিয়াম আহমেদ বলেন, অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছিলেন রাকিব। এর সঙ্গে মাথা ব্যাথা, জ্বর, অনিদ্রাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ১২ দিন তিনি খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। রাত ৮টার দিকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে জ্বর ও মাথা ব্যাথা নিয়ে গত ১২ জুন ঢাকায় বেসরকারি ইবনে সিনা হাসপাতালে যান রাকিব। তার পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসকরা জন্ডিসের আশঙ্কা থেকে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। এখানে দুই দিন ভর্তি থাকার পর পরিবারের সদস্যরা তাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।

পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা তার চিকিৎসার বিষয়ে বলেন, তবে ওই সময় রাকিবের মাথা ব্যাথা অনেক বেড়ে গেলে তাকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন তার ছটফট অবস্থা দেখে চিকিৎসকরা ইনজেকশন প্রয়োগ করেন।

এ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেফার করেন। সেখানেও তাকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। এখানে এক রাত ভর্তি থাকার পর ঈদের আগে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে খুলনায় নিয়ে যান। সেখানে ভর্তি করা হয় আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।

রাকিবের ছোট বোনের স্বামী সিয়াম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন তারা হাসপাতাল বদলের পরিকল্পনা করেন।

তিনি চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করে বলেন, দুপুরে তার তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় আমরা অক্সিজেন সুবিধা চেয়েও পাচ্ছিলাম না। হাসপাতাল থেকে রিলিজও চেয়েও পাচ্ছিলাম না। রাত ৮টার দিকে রিলিজ পেয়ে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।