ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পেঁয়াজের বাজার আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সোমবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ভোক্তা-অধিকার বিষয়ক সচেতনতামূলক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ ইতোমধ্যে বাজারে আসা শুরু করেছে। পেঁয়াজ মজুতদারদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ইতোমধ্যে কিছু মজুতদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এখনো যারা অচিহ্নিত রয়েছে তাদেরও চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জ ও শ্যামবাজারে থরে থরে সাজানো পেঁয়াজ আমাদের অভিযানের পরে কীভাবে উধাও হয়ে গেল? কারা পেঁয়াজ লুকিয়ে রেখেছে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে দেশের ৫৪টি জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত কিছুদিন আগে হিমাগার থেকে ছয় লাখ ডিম মজুত অবস্থায় পাওয়া গেছে। মাংস ও আলুর বাজারে অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কালোবাজারি, মজুতদাররা সরকারের চেয়েও শক্তিশালী। রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সুযোগ পেলেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। জনগণকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। বর্তমানে পেঁয়াজ নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড তারই প্রমাণ। তবে আশা করা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই অসৎ পেঁয়াজ কারবারীদের নিষ্ক্রীয় করা যাবে।
তিনি বলেন, ভারতে ঋণপত্র খোলা ৫৫ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে আনার দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও টিসিবির কাছে সাড়ে তিন হাজার টন পেঁয়াজ রয়েছে। অন্যদিকে দেশীয় পেঁয়াজও বাজারে আসা শুরু করেছে। আমি ধারণা করছি এবারও অসৎ মজুতদার পেঁয়াজ কারবারীরা হয়তো গোডাউনে পেঁয়াজ পঁচাবে অথবা গোপনে পানিতে ফেলে দেবে। তাই আশা করব, যারা বিভিন্ন জায়গায় পেঁয়াজ লুকিয়ে রেখেছে তারা দ্রুত লোকসান এড়াতে চাইলে বাজারে দ্রুত পেঁয়াজ সরবরাহ করবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা প্রমুখ।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ও রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে ইডেন মহিলা কলেজ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্রসহ যথাক্রমে নগদ দুই লাখ ও এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।