ই-অরেঞ্জ একটি ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। কিছুদিন আগেই প্রতিষ্ঠানটি মালিকানা পরিবর্তন করেছেন। প্রায় ২০০ কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে মালিকানা এবং কার্যালয় পরিবর্তন করে লাপত্তা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, ১১ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি মালিকানা পরিবর্তন করেন। ই-অরেঞ্জের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বীথি আক্তার নামে একজনকে কোম্পানিটির নতুন মালিক ঘোষণা করা হয়। আগে মালিক ছিল সোনিয়া মেহজাবিন এবং বর্তমান মালিক বিথী আক্তার। সাবেক মালিক বর্তমানে বিদেশে আছে কিন্তু বিথী আক্তারের কোন খবর পাওয়া যায় নি। ২০১৮ সাল থেকে ঢাকায় অনলাইন সেবা দিয়া আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে গত ১২ জুলাই ফেসবুক পেইজে একটি পোস্টের মাধ্যমে অফিস বন্ধের কথা জানায়।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এই প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে ব্যবসার পাশাপাশি এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা পরিচালনা করতো। যা আমাদের দেশে একেবারেই নিষিদ্ধ। এমএলএম ব্যবসাকে আড়াল করতেই মূলত অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতো। বিভিন্ন প্যাকেজের লোভ দেখানো হত। এসব প্যাকেজে আছে গৃহস্থালি পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য, হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য, প্রসাধন ও টয়লেট্রিজ পণ্য এবং হারবালসহ নানা ধরনের পণ্য। দেশে প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য, রীতিনীতির সঙ্গেও কোনো মিল নেই। মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো সদস্য বানাচ্ছে সহজ-সরল তরুণ-তরুণীদের।
অবশেষে লাপাত্তা ই-অরেঞ্জ
প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মচারীর সাথে কথা বলে জানান যায়, গত মাস থেকেই কর্মচারীদের বেতন বন্ধ থাকায় কাজও বন্ধ
করে দেয় কর্মচারীরা এবং মালিক পরিবর্তন হয়েছে কি না সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
তবে ই-অরেঞ্জ দাবি করছেন অন্য কথা। ১১ আগস্ট তাদের অফিসে কয়েকজন রিসেলার অফিসে আসে এবং বিভিন্ন
হুমকি দেয়। অফিসের কর্মকর্তাদের একটি কক্ষে বন্ধ করে রাখে এবং তাদের গায়েও হাট তুলে। বারবার অনুরোধ করার
পরও রিসেলাররা না যাওয়ায় গুলশান থানা পুলিশ এসে ব্যাপারটি দেখে এবং তাদের কে বের করতে সাহায্য করে।
ঘটনাটি তারা তাদের ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
এক ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান, তিনি এপ্রিলে দুইটি বাইক অর্ডার করেছিলেন যা তিনি এখনো পায় নি। তার কাছ থেকে
গত ১৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় নিয়েছিল। এমন আরও ভুক্তভোগী ছিল যাদের ডেলিভারি ডেইট দেওয়া হয়েছে ১৭ আগস্ট।
আরেকজন ভুক্তভোগী ৭ টি বাইক অর্ডার করেছিলেন এবং ডেলিভারি ডেইট ছিল জুলাই মাস। লকডাউন এর অজুহাতে
প্রতিষ্ঠানটি ডেলিভারি ডেইট পেছেতে থাকে। আর এখন তাদের অফিসও বন্ধ। তিনি বুঝতে পারছে না এখন কি করবে।
তিনি মূলত তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে মাশরাফিকে রেখেছে দেখে ভরসা পেয়ে এত এত পণ্য অর্ডার করেছিলেন।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তাদের ফাঁদে ফেলতে তারা এই কাজ করেছে।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) জিএম জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ই-অরেঞ্জ সাবেক ও বর্তমান
উভয় মালিককে আমরা নোটিস করেছি। তাদের মলিকানা পরিবর্তনের ব্যাপারে আমরা কিছুই জানতাম না। অনেক পরে
জানতে পেরেছি। এছাড়া যতোগুলো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি সবগুলোর প্রতিষ্ঠানে আমরা নোটিস করেছি।
তাদের জবারের পর আমাদের সিন্ধান্ত নিবো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ই-কমার্স মার্চেন্টদের ব্যাংক হিসাবের
বিবরণ চাওয়ার পর বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ও একটি মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ই-অরেঞ্জসহ ১০টি ই-কমার্স
সাইটের লেনদেনের জন্য তাদের কার্ডের ব্যবহার সাময়িককভাবে স্থগিত করেছে।
এইচ এম || ভোক্তাকণ্ঠ
ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সংবাদ দেখুন
আরো সংবাদ দেখুন: কচ্ছপ গতিতে ডেলিভারি দিচ্ছে REDX, এফ-কমার্স পেজে প্রতারণার হার বেশি, বেড়েছে এফ-কমার্স পেজের প্রতারণার হার , Eorange শপ থেকেও প্রতারিত হচ্ছে জনগণ