পণ্য, রিফান্ড কিছুই দিচ্ছে না আদিয়ান মার্ট

বর্তমানে ই-কমার্স সাইটগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ আসছে। আদিয়ান মার্ট এর বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে। অধিকাংশ অভিযোগই নিত্যপণ্য বিক্রির পর সেগুলো ডেলিভারি না দেওয়ার।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট অল্প দামে স্মার্টফোন বিক্রির জন্য ব্যাপক পরিচিতি পেলেও প্রতিষ্ঠানটি
নির্ধারিত সময়ে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফোন ধরে না কাস্টমার
কেয়ারের নাম্বরগুলো।

আদিয়ান মার্টের বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা আটকে রাখা, সময়মতো পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া এবং ই-কমার্স
ব্যবসার শর্তভঙ্গ ও নীতিমালা লঙ্ঘনসহ অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ
অধিদফতর এর কাছে।

সিয়াম হোসেন নামের একজন ভুক্তভোগী তার অভিযোগে জানায়, তিনি ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট থেকে k30i মডেলের একটি মোবাইল ফোন অর্ডার করেন এবং মার্চের ২৮ তারিখে redmi Note 10pro(6/128) মডেলের আরো একটি মোবাইল ফোন অর্ডার করেন।

অভিযোগে সিয়াম আরো জানায়, তিনি ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে পণ্য পাওয়ার কথা। কিন্তু ভোক্তাকন্ঠের কল সেন্টার থেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জুলাই মাসের ৩১ তারিখ এখনো তিনি পণ্য কিংবা টাকা ফেরত পাননি।

উপায় না দেখে তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এর নিকট দুইটি অভিযোগ করেন সিয়াম হোসেন। অভিযোগগুলো এখনও নিস্পত্তি পায়নি।

এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,

ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক,
ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক,ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য,
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অমান্য করা এবং গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আদিয়ান মার্ট থেকে
গ্রাহকদের কেনাকাটায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে । এছাড়া বিকাশের পেমেন্ট গেটওয়েও এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
দিয়েছে। এই ১০ ব্যাংক ও বিকাশের গ্রাহকরা তা‌দের ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড কার্ড দিয়ে এই ই-কমার্স
সাইটে পণ্যের অর্ডার দিতে পারবেন না।

বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বিকাশ ওয়ালেট থেকে আদিয়ানের
পেমেন্ট বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন।

এছাড়া তিনি জানান, ই-কমার্সের ক্ষেত্রে রেগুলেটর প্রদত্ত পেমেন্ট বিষয়ক নীতিমালাগুলো কার্যকর করতে
আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাহকদের স্বার্থেই আদিয়ান মার্ট সহ কিছু মার্চেন্টের জন্য বিকাশের
পেমেন্ট গেটওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রতিদিনই অনেক মানুষ এফ-কমার্স, ই -কমার্স কিংবা অনলাইন সাইট থেকে নানাভাবে হয়রানির শিকার
হচ্ছেন। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কিছু প্রতারক চক্র। এসকল প্রতারণা রুখতে আমাদের
এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ভোক্তাদের হয়রানি বন্ধে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সাথে কাজ করছে ভোক্তাকণ্ঠ।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, “যে কোন ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন
ভোক্তা বা ভোক্তা হইতে পারেন, এই অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক
বা এতদুদ্দেশ্যে মহাপরিচালকের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন”।

কিভাবে অভিযোগ করবেন:


দায়ের করা অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে। ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে অভিযোগ দিতে হবে।
অভিযোগের সঙ্গে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রসিদ সংযুক্ত করতে হবে। অভিযোগকারী তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাম,ঠিকানা,ফোন,ই-মেইল ঠিকানা এবং পেশা উল্লেখ করবেন।

ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন যে কোন অভিযোগে ভোক্তাদের প্রতিকার দিতে পাশে আছে ভোক্তাকণ্ঠ। তাই অভিযোগ করুন এবং ভোক্তাকণ্ঠের পাশে থাকুন।


এইচ এম || ভোক্তাকণ্ঠ

ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সংবাদ দেখুন
আরো সংবাদ দেখুন: বেড়েছে এফ-কমার্স পেজের প্রতারণার হার, ফাল্গুনী শপের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *