ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করবে। প্রথমে এ ব্যবস্থা ঐচ্ছিক রাখা হবে। অর্থাৎ যার ইচ্ছে সে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। তবে এক পর্যায়ে এ ব্যবস্থা যোগ্য নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামুলক করা হবে। দেশে থাকা নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্লফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির চাঁদায় সরকারও অংশ নেবে। অর্থাৎ একজন পেনশন হিসাবধারী যে পরিমাণ চাঁদা দেবেন সরকারও তার সমপরিমান টাকা দেবে। তবে এ সুবিধা সবাই পাবেন না। একটি নির্দিষ্ট আয়সীমার মানুষকে এ ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি একটি ইতিহাস। বার্ধক্যজনিত সময়ে সরকার জনগণের দায়িত্ব নেবে। এটি রাষ্ট্রের অসাধারণ অর্জন। এতে প্রত্যেকটি মানুষ উপকৃত হবেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বৃদ্ধকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই অঙ্গীকার অনুযায়ী এই পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, দেশের প্রেক্ষাপট ও সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার কৌশলপত্র প্রনয়ণ করা হয়েছে। এই কৌশলপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনরার সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সেইসব নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করে শিগগিরই একটি আইন করা হবে। আইন প্রনয়ের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী অর্থবছর থেকে এ ব্যবস্থা চালু করা হবে। প্রথমে কারা কিভাবে এ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হবে তা আইনে উল্লেখ থাকবে। ব্যবস্থাটির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও পরিচালনার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা ভোগ করছে। বর্তমানে দেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল ৭৩ বছর। ২০৫০ সালে এই আয়ুষ্কাল বেড়ে ৮০ বছর এবং ২০৭৫ সালে তা আরও বেড়ে ৮৫ বছর হবে। ফলে আগামী তিন দশকে একজন কর্মজীবী ব্যক্তি অবসরের পরেও ২০ বছর আয়ু থাকবে। বাংলাদেশে বর্তমানে নির্ভরতার হার(ডিপেন্ডেন্সি রেশিও) হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০৫০ সালে এই হার বেড়ে ২৪ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে তা ৪৮ শতাংশ হবে। গড় আয়ুষ্কাল ও নির্ভরতার হার বৃদ্ধির বিবেচনায় বৃদ্ধকালীন নিরাপত্তা হিসেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা খুবই জরুরি।