ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: গম এবং চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার খাদ্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চালের রপ্তানির লাগাম টানতে যাচ্ছে ভারত। দেশীয় বাজারে চালের সহজলভ্যতা নিশ্চিত ও মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ভারত এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে দেশটির কয়েকটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে।
গম এবং চিনির রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর ভারতের পরবর্তী খাদ্য সুরক্ষামূলক লক্ষ্য হতে পারে চাল। আর ভারত এমন পদক্ষেপ নিলে তা বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের প্রধান খাবার ভাত।
এর আগে, গম এবং চিনি রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাজারে ব্যাপক টালমাটাল অবস্থা তৈরি করে। ভারতের নিষেধাজ্ঞার পরপরই বিশ্ববাজারে এ দুই খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। ভারতের মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশও নানা ধরনের খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে লাগাম টানছে।
গম এবং ভুট্টার দাম যখন আকাশচুম্বী তখন বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক এই দেশটি চালের ক্ষেত্রে একই ধরনের পদক্ষেপ নিলে তা বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে ক্ষুধার মুখোমুখি করবে এবং মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি হবে।
ইয়েস ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ রাধিকা পিপলানি বলেছেন, সরকার ইতোমধ্যে গম রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ধরনের সব পদক্ষেপ খাদ্যের দাম কমিয়ে দেবে কিনা এবং কতদিন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে এখন সেটিই চ্যালেঞ্জের।
তবে চালের রপ্তানি নিষিদ্ধের পরিকল্পনার ব্যাপারে জানতে ভারতের খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
ভারত পর্যাপ্ত পরিমাণের চেয়েও বেশি চাল মজুদ করেছে এবং দেশটির বাজারে এখন অন্যতম এই খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভারতীয়দের খাদ্যতালিকায় গমের সাথে চালও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এছাড়া দেশটিতে সরকারি যে রেশন দেওয়া হয় তাতেও চাল রয়েছে।
খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির জন্য সরকারিভাবে গম ক্রয় আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরে অর্ধেকেরও কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং দেশটির সরকার দরিদ্রদের মাঝে আরও চাল বিতরণের পরিকল্পনা করেছে। এর ফলে কর্তৃপক্ষ দেশীয় সস্তা চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাইবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।