ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: মূল করোনাভাইরাস ও সেটির ৪ রূপান্তরিত ধরন আলফা, বিটা, ডেল্টা ও গামা তুলনায় ওমিক্রনের জীবনীশক্তি সবচেয়ে বেশি। জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী বায়োরিক্সিভে সম্প্রতি ছাপাও হয়েছে সেই গবেষণা প্রতিবেদন। সেখানে বলা হয়েছে, মুক্ত আবহাওয়ায় মানুষের ত্বকের উপরিভাগে ওমিক্রন ভাইরাস বেঁচে থাকে ২১ ঘণ্টারও বেশি সময়; যেখানে সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাস ৮ দশমিক ৬ ঘণ্টা, আলফা টিকে থাকে ১৯ দশমিক ৬ ঘণ্টা, বিটা ১৯ দশমিক ১ ঘণ্টা, গামা ১১ ঘণ্টা এবং ডেল্টা ১৬ দশমিক ৮ ঘণ্টা মুক্ত হাওয়ায় মানুষের ত্বকের উপরিভাগে টিকে থাকতে সক্ষম।
অন্যদিকে, প্লাস্টিকের কোনো বস্তুর ওপর ওমিক্রন টিকে থাকতে পারে ১৯৩ দশমিক ৫ ঘণ্টা, ২৪ ঘণ্টার দিনের হিসেবে এই সময়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ দিনেরও বেশি সময়। অন্যদিকে মূল করোনাভাইরাস ৫৬ ঘণ্টা, আলফা ১৯১ দশমিক ৩ ঘণ্টা, বিটা ১৫৬ দশমিক ৬ ঘণ্টা, গামা ৫৯ দশমিক ৩ ঘণ্টা ও ডেল্টা ১১৪ ঘণ্টা প্লাস্টিকের ওপর টিকে থাকতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মহামারির গত দুই বছরে ধীরে ধীরে স্যানিটাইজার প্রতিরোধী হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস ও তার রূপান্তরিত ধরনগুলো। ৩৫ শতাংশ ইথানল রয়েছে- এমন স্যানিটাইজার হাতে ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই একসময় এসব ভাইরাস ধ্বংস হতো, কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এই পরিমাণ ইথানলসমৃদ্ধ স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর ভাইরাস ধ্বংস হতে সময় লাগছে ১৫ সেকেন্ড।
তবে তারপরও ওমিক্রনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় হাত স্যানিটাইজিংয়ের কোনো বিকল্প নেই বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন জাপানের গবেষকরা।
ওমিক্রন ভাইরাসটির সন্ধান প্রথম পাওয়া যায় গত বছরের ২৪ নভেম্বর, দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারপর অকল্পনীয় দ্রুতগতিতে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এই ভাইরাসটি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সবদেশেই ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে অন্তত ৭০ গুণ দ্রুত গতিতে ছড়ায় ওমিক্রন। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসটি করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের (সুপার স্প্রেডার) স্বীকৃতি পেয়েছে।
তবে গবেষকরা বলেছেন, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হলেও মূল করোনাভাইরাস বা সেটির অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনগুলোর তুলনায় প্রাণঘাতী নয় ওমিক্রন।
বিভিন্ন দেশের করোনা পরিসংখ্যানও সেই তথ্যই দিচ্ছে। সেসব পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই তুলনায় এই ধরনটিতে আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম।