ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে চীনের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হংকং ও ৫টি দেশে। এই দেশগুলো হলো যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভারত।
হংকংয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) ওমিক্রনের দু’টি উপধরন বিএ.১ এবং বিএ.২ সমন্বয়েই উদ্ভব ঘটেছে নতুন এই ধরনটির এবং প্রাথমিকভাবে এটির নাম রাখা হয়েছে বিএ.২.২। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে এ সম্পর্কে কোনো ঘোষণা আসেনি।
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় এলাকার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন এই উপধরনটির প্রাথমিক নামকরণ করেছেন হংকংয়ের গবেষকরা।
হংকংয়ের গবেষকরা বলেছেন, এ পর্যন্ত ওমিক্রনের চারটি উপধরন শনাক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক দু’টি ধরন হলো বিএ.১ (ওমিক্রন) এবং বিএ.২ (স্টেলথ ওমিক্রন)। বিএ.১ এবং বিএ.২’র সংমিশ্রণেই নতুন উপধরনটি এসেছে।
অতীতেও অবশ্য এ রকম মিশ্র ধরন উদ্ভবের রেকর্ড আছে। সম্প্রতি করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টা ও সবচেয়ে সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের মিশ্রণে উদ্ভব হয়েছিল করোনাভাইরাসের হাইব্রিড ধরন ডেল্টাক্রন।
ইসরায়েলের কোভিড টাস্কফোর্স বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা সালমান জারকা এ প্রসঙ্গে গালফ নিউজকে বলেন, ‘একটি কোষে যখন একই প্রজাতির দু’টি ভাইরাস ক্রিয়াশীল থাকে, সেক্ষেত্রে বংশবিস্তারের সময় সেগুলো নিজেদের মধ্যে জেনেটিক উপাদান আদান-প্রদান করে। এর মাধ্যমেই নতুন ভ্যারিয়েন্টে বা সাবভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব ঘটে।’
গালফ নিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে ওমিক্রনের বিএ.২.২ উপধরনে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ইসরায়েলে। দেশটির বেনগুরিয়ান বিমানবন্দরে দুইজন যাত্রীর দেহে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে সালমান জারকা গালফ নিউজকে বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ওই দুই যাত্রী বিদেশ থেকে এই ধরনটিতে নিয়ে আসেননি, তারা আক্রান্ত হয়েছেন ইসরায়েলের ভেতরেই।
ভারতে এ পর্যন্ত তিনজনের দেহে বিএ.২.২ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই তিনজন মহারাষ্ট্র, পদুচেরি ও লাদাখের। এছাড়া যুক্তরাজ্যে ২৮৯ জন এবং থাইল্যান্ডে ৪ জন এই ধরনটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে এখন পর্যন্ত সবেচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে হংকংয়ে— ৩৮৯ জন। মাহিদোল বিশ্ববিধ্যালয়ের সেন্টার ফর মেডিকেল জেনোমিক্স এক ফেসবুবক পোস্টে জানিয়েছে, হংকংয়ে বর্তমানে করোনার দৈনিক সংক্রমণে যে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে, তার জন্য দায়ী এই বিএ.২.২।
থাইল্যান্ডের গবেষক সুপাকিত সিরিকাত গালফ নিউজকে জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত জ্বরের অনুভূতি, মাংসপেশিতে ব্যাথা এবং মাথাব্যাথা— এই তিনটি উপসর্গের তথ্য পাওয়া গেছে বিএ.২.২ ধরনটির।’