কলেজ সরকারি হলেও শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি হতে না পারায় প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা সরকারি সুবিধা না পেয়েই অবসরে যাচ্ছেন। কবে নাগাদ তারা সরকারি সুবিধা পাবেন তা শিক্ষা প্রশাসন সহ কেউই বলতে পারছেন না।
২০১৬ সালের ১৭ মে থেকে সরকারিকরণের জন্য পর্যায়ক্রমে ৩০৩টি কলেজ নির্বাচন করা হয়। এরপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ে মাত্র একটি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা আত্তীকৃত হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। অবশিষ্ট ৩০২টি কলেজের শিক্ষকেরা এখনো অনিশ্চয়তায়।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে আগামী তিন-চার বছরে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। চাকরিবিধি অনুযায়ী বয়স ৫৯ বছর হওয়ায় এ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেছেন। প্রতিদিন এই তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এসব কলেজে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৪১৮। ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত অবসর গ্রহণ করেন ৩৩৮ জন। আর জুলাই ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অবসরে যান ১৬৯ জন। ২০২০ সালে অবসরে যান ৪৩৫ জন। তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে অবসরে যাবেন ৪৫০ জন। ২০২২ সালে ৪৫৮ জন, ২০২৩ সালে ৪৪৮ জন, ২০২৪ সালে ৪৫৬ জন এবং ২০২৫ সালে অবসরে যাবেন ৫২৫ জন।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মু. ফজলুর রহমান বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে কাজ পিছিয়ে আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে লকডাউন থাকায় কলেজের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা যথাসময়ে এসে তথ্য দিতে পারেন না। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকার কলেজগুলোর জন্য নির্ধারিত সময় থাকলেও সে সময় তারা আসতে পারেননি। এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন, ‘কাজ প্রায় এগিয়ে এনেছি। এখনো ৫০টির মতো কলেজের যাচাই-বাছাইয়ের কাজ হয়তো বাকি আছে। এ কাজগুলো দ্রুত করা হবে। জুনের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা পারা যায়নি। যেসব শিক্ষক অবসরে গেছেন, তাদের সুবিধা পাওয়ার নিয়ম আছে।’
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩০২টি কলেজের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৯২টি কলেজের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১৫টি কলেজের বিষয়ে তথ্য চেয়ে জনপ্রশাসন থেকে ফাইল ফেরত পাঠানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে গেছে দুটি কলেজের ফাইল। আর ৩৮টি কলেজের যাচাই-বাছাই এখনো বাকি রয়েছে। বাকি ফাইলগুলো এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ধীরগতি ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এসব কাজ শেষ হতে হয়তো আরো কয়েক হাজার শিক্ষক অবসরে চলে যাবেন।
সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম বলেন, যে গতিতে কাজ চলছে, তাতে আগামী সাত-আট বছরেও শিক্ষক-কর্মচারীরা আত্তীকরণ হবেন বলে আমার মনে হচ্ছে না। এ কারণে আমরা হতাশ, ক্ষুব্ধ।