ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপ অনুভব করছে গোটা বিশ্ব। ইতোমধ্যে যুদ্ধরত দুই দেশ ছাড়াও অনেক দেশ আঁচ করতে পারছে এর অর্থনৈতিক প্রভাব। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) এক প্রতিবেদন বলছে, এই যুদ্ধ উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত অনেক দেশের বাণিজ্য, খাদ্যপণ্যের দাম ও আর্থিক বাজারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার কারণে এমনিতেই অর্থনীতিতে চলছে দৈন্যদশা। তার ওপর নতুন করে এমন সংকটের ফলে কোনো কোনো দেশে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, খাদ্য ঘাটতি এমনকি মূল্যস্ম্ফীতি-প্রসূত মন্দাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বাণিজ্য ও উন্নয়নের ওপর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব :আঙ্কটাডের দ্রুত পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় শঙ্কার বিষয় হচ্ছে- খাদ্য ও জ্বালানি খাত। কারণ রাশিয়া ও ইউক্রেন কৃষি খাদ্যের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশ। বিশ্ববাজারে সূর্যমুখী তেল ও বীজের ৫৩ শতাংশই সরবরাহ করে এই দুটি দেশ। গমের ২৩ শতাংশ আসে এই দেশ দুটি থেকে। রাশিয়ার উৎপাদন কমে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম বেড়েছে। রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক। দেশটি বিশ্ববাজারে সারসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য, ধাতব জিনিসেরও গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী।
আঙ্কটাড বলছে, খাদ্যপণ্যের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বড় উদ্বেগের কারণ। কারণ অনেক দেশই খাদ্যপণ্যের আমদানির জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, তুরস্ক আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে গম, ভুট্টা, বার্লি, সূর্যমুখী তেল ও বীজ আমদানি করে তার প্রায় ২৬ শতাংশই নেওয়া হয়ে থাকে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। চীনের ক্ষেত্রে এই হার ২৩ শতাংশ। আর ভারতের ১৩ শতাংশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি প্রায় ছয় শতাংশের মতো।
আঙ্কটাডের হিসাব অনুসারে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুগবে নিম্ন আয়ের দেশগুলো। এ দেশগুলোর যেসব খাদ্যপণ্য আমদানি করে তার ৫ শতাংশের দাম বেড়ে যেতে পারে। অবশ্য ধনী দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই হার এক শতাংশের নিচে।