টেলিকম খাতে ভোক্তার অভিযোগ শুনবে বিটিআরসি

টেলিকম খাতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে এসব অভিযযোগ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক মীমাংসার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে একটি বেসরকারি মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক এই ব্যবস্থা আপাতত স্থগিত রয়েছে। ফলে টেলিকম খাতে ভোক্তার অভিযোগ মীমাংসার আপাতত কোনো ব্যবস্থা নেই। এর মধ্যেই ঘোষণা এসেছে, আগামী ৩০ মার্চ ২০২০ টেলিকম খাতে ভোক্তার অভিযোগ শুনতে গণশুনানির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৩০ মার্চ সকাল ১০টায় রমনায় আইইবি অডিটরিয়ামে টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, টেলিযোগাযোগ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীসহ আগ্রহী যেকোনো ব্যক্তি এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে গণশুনানিতে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের অনলাইনে নিবন্ধন করা আবশ্যক বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। নিবন্ধনের জন্য http://www.btrc.gov.bd/registration-form ঠিকানা থেকে নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে।

এই নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে। বিটিআরসি থেকে ফিরতি ই-মেইলের মাধ্যমে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। বিটিআরসির পাঠানো নিশ্চিত করা ওই ই-মেইল এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে। গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য, প্রশ্ন বা উপদেশ ইত্যাদি ফরমের নির্দিষ্ট স্থান পূরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শুধু বিষয় সংশ্লিষ্ট যৌক্তিক প্রশ্ন বা বক্তব্য উপদেশ (বাছাইকৃত) প্রদানদারীদের তারা শুনানিতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেবে। নিশ্চিতকরণ ই-মেইল এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি।

২০১৬ সালের নভেম্বরে বিটিআরসি প্রথম গণশুনানির আয়োজন করেছিল। এরপর ২০১৯ সালের জুনে গণশুনানি আয়োজন করে সংস্থাটি। এসব শুনানিতে অংশগ্রহণকারীরা কলড্রপ, প্যাকেজ ‘প্রতারণা’ ও এসএমএসে অসন্তুষ্টি নিয়ে বিটিআরসিকে জানায়। তবে দীর্ঘদিন পর গণশুনানি হওয়ায় তাতে ভোক্তাদের সমস্যা খুব একটা সমাধান হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রের ম্যানেজার অরুণিমা ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রয়াশই টেলিকম খাতে ভোক্তাদের অভিযোগ পেয়ে থাকি। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এগুলো নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। বিটিআরসির শুনানির উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে ভোক্তাদের অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া আরও সরল হওয়া দরকার। বড় কথা হলো, ভোক্তাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়টিতে জোর দেয়া উচিত।’

ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র মারফত জানা যায়, টেলিকম খাতে ভোক্তাদের অভিযোগ আপাতত না হলেও ভবিষ্যতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এগুলো নথিভুক্ত করে রাখা হচ্ছে। ভোক্তা প্রতারিত বা বঞ্চিত হলে ০১৯৭৭০০৮০৭১ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানোর আহবান জানিয়েছে সংগঠনটি।

(খবর : ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র )