ডিজেলের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে জাতীয় পার্টি। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দলটি।
রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির দুই সংসদ সদস্য এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোভিড মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করল, ঠিক তখন হঠাৎই ডিজেলের তেলের দাম বৃদ্ধি করা হলো। কোনো পূর্ব নোটিশ না দিয়ে ২৩ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে একসঙ্গে এত পরিমাণ দাম বাড়ানো হয়নি।
তিনি বলেন, শুক্র ও শনিবারে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা হয়। ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো বৃহস্পতিবার। এরপর পরিবহন মালিকরা ধর্মঘটে চলে গেলেন। এতে পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বাসভাড়া ২৭ শতাংশ, নৌযান ভাড়া ৩৭ শতাংশ বাড়ানো হলো, যা ডিজেলের দাম বাড়ানোর তুলনায় অনেক বেশি। জানি না কেন এখানে সমন্বয় নেই।
সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ৭৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। বর্তমান সরকার নির্বাচিত সরকার। সরকার কেন করোনা পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে ডিজেলের দাম বাড়াল? এর বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যেত না? এমনিতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। তেলের কারণে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিন। মানুষকে বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি দিন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানো সাধারণ মানুষকে চরমভাবে আঘাত করেছে। দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ এই জ্বালানির মূল না বাড়িয়ে ঠিক রেখেছে। আমাদের সরকার ইচ্ছা করলে এটি করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে যায়, তখন আমাদের এখানে কমানো হয় না। অজুহাত দিয়ে বাড়ানো হলে সেটা কত শতাংশ হতে পারে?
তিনি বলেন, কত পরিমাণ বাড়াতে পারি, তা আমাদের চিন্তা করা উচিত। দাম বাড়ানোর পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ বিষয় প্রধানমন্ত্রীসহ ক্যাবিনেটের নতুন করে চিন্তা করা উচিত। কারণ জনস্বার্থ সবার আগে। জনস্বার্থে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। হয় মূল্য কমান, না হয় ভর্তুকির ব্যবস্থা করুন।