পবিত্র শবে বরাতের এখনো প্রায় দেড় সপ্তাহ বাকি। তার আগেই বেড়ে গেছে গরুর মাংস, চিনি ও পাস্তুরিত তরল দুধের দাম। বাজারে এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশি। কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। তরল দুধের সুপরিচিত ব্র্যান্ড মিল্ক ভিটা লিটারে ৫ টাকা বাড়িয়েছে তরল দুধের দাম। নতুন দাম প্রতি লিটার ৭৫ টাকা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২৯ মার্চ পালিত হবে পবিত্র শবে বরাত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শবে বরাতে গরুর মাংস, চিনি ও দুধের চাহিদা বাড়ে। মুরগির দাম আগে থেকেই বাড়ছিল। গত সপ্তাহে সে তালিকায় যুক্ত হয়েছে গরুর মাংস।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও পাড়া–মহল্লার মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাটেই বাড়তি দামে গরু কেনাবেচা হচ্ছে। এ কারণে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, গরুর মাংস এখন ৬০০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হতো।
টাউন হলের পাশাপাশি আজ বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরের কাটাসুর ও মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের কাঁচাবাজারের গিয়ে দেখা যায়, মুরগি বিক্রেতারা দর-কষাকষির কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, সোনালিকা ৩৩০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজি হাঁকছেন তাঁরা। মিরপুরের টোলারবাগের বাসিন্দা সামছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কল্যাণপুর নতুন বাজার থেকে সোনালিকা মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা দরে কিনেছেন। এক সপ্তাহ আগেও এই মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা ছিল।
রাজধানীর তিনটি কাঁচাবাজার ঘুরে খোলা চিনি প্রতি কেজি ৬৮ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি। একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত চিনির মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) দেখা যায় ৭৮ টাকা, যা গত মাসেও ৭৫ টাকা ছিল। জানুয়ারিতে ছিল ৭০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মুদিদোকানি আজম খান বলেন, খোলা চিনির দাম বেশি বেড়েছে। ৫০ কেজির এক বস্তা চিনি কিনতে লাগছে ২৫০ টাকা। পাইকারি দোকান থেকেই ১ কেজি চিনি ৬৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহেই ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সুযোগ দিয়েছিল। বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ধরা হয়েছে লিটারপ্রতি ১৩৯ টাকা, যা আগের চেয়ে ৪ টাকা বেশি। অবশ্য বাজারে নতুন নির্ধারিত দামের তেল আসেনি।
চালের দামও বেড়েছে। মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক ও কাদেরাবাদ হাউজিং এবং ধানমন্ডির শংকর এলাকা ঘুরে মুদিদোকানে আগের চেয়ে প্রতি কেজি ২ থেকে ৩ টাকা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে দেখা যায়। বিভিন্ন দোকানে নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৬ টাকা এবং বিআর ২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। কাটাসুর বাজারের দোকানি মাহফুজ আলম বলেন, মিল পর্যায়ে এখনো চালের দাম বেশি। যে কারণে খুচরায় বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।
চাল, ভোজ্যতেল ও মুরগি চড়া দামের মধ্যে চিনি, দুধ ও গরুর মাংসের বাড়তি দাম মানুষের সংসারের খরচ আরও বাড়িয়েছে। মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদের বেসরকারি চাকরিজীবী মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চালের দাম বেশি। সেটা কোনোভাবেই কমল না। এখন হঠাৎ করেই দেখছি অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে।’
সুত্রঃ প্রথম আলো (তানিন)