চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে ৫ লাখের নিচে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া-যুক্তরাজ্যকে হটিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে জার্মানি। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন-ব্রাজিল-মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ কোটি ২৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ লাখ ৯৪ হাজার।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৫০২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে এক হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬০ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩০৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ২৬ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৫৩ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া-যুক্তরাজ্যকে হটিয়ে সংক্রমণের শীর্ষস্থানে উঠে আসা ইউরোপের এই দেশটিতে গত এক দিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ৩৭৭ জন এবং মারা গেছেন ২২৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৯ লাখ ২৫ হাজার ৯২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৭ হাজার ৮২২ জনের।
অন্যদিকে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৩৭ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৫৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬৯১ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৫৯৬ জন এবং মারা গেছেন ৫৩৯ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৫ জন মারা গেছেন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪২ হাজার ৪০৮ জন এবং মারা গেছেন ১৯৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৩৩ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৪৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লাখ ২৬ হাজার ৫২৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১০ হাজার ৩২৩ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৫ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯০ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪ হাজার ৬০ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৬২ হাজার ৩৮৪ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১২৩ জন, তুরস্কে ১৯৭ জন, ইউক্রেনে ৬৫২ জন এবং পোল্যান্ডে ২৭৪ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২৬৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৭৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।