বৃক্ষ রোপণ, পরিবেশ উন্নয়ন ও আমাদের করণীয়

“বৃক্ষ রোপণ করে যে, সম্পদশালী হয় সে” এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করলেই এর গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়।
খাদ্য, ঔষধ, পরিধান, নির্মাণ সামগ্রী, জালানি, অক্সিজেন, ফলমূল, পরিবেশ উন্নয়ন ইত্যাদি মানব জীবনে বেচে থাকার জন্য,
যা প্রয়োজন তার প্রায়ই আসে বৃক্ষ হতে। গাছের ফল, কাঠ সহ যা আমরা ব্যবহার করছি তা আমাদের মুরব্বীগণ লাগিয়েছিলেন
বলেই আমরা পাই।

যদি আমরা এখন বেশি বেশি গাছ না লাগাই তাহলে আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে, জীবন সীমিত হবে। রোগবালাই বৃদ্ধি
হবে, এমন কি বেচে থাকাও দায় হবে। বিশ্ব ভ্রমন করেছি, বিশেষ করে ১১৭ বার ইউরোপের দেশে গিয়েছি, অনুভব হয়েছে।

আমরাই পৃথিবীতে সব চেয়ে বেশি সুখে থাকার স্বপ্ন দেখতে পারি, উর্বর মাটি, প্রয়োজনীয় পানির সমান্বয়,সুজলা-সুফলা,শষ্য-শ্যমলা, সবুজ অরণ্যে ঘেরা, একমাত্র দেশই আমাদের বাংলাদেশ। যেখানে সেখানে গাছ লাগালেই বড় হয়ে যায়, যা বিশ্বের কোথায়ও এ সুযোগ নাই। আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু দেখছিনা, কেবল সরকারী-বেসরকারী সর্বস্তরের জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে, বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে, অবশ্যই নিজের পায়ে দাড়িয়ে, বলতে পাড়ি আমরাই পৃথিবীর সেরা ও সুখি সম্বুদ্বশালী।

আমাদের পতিতজমি, খাল, বিল, নদী-নালা, রাস্তা ঘাট, পাহাড়-পর্বত, অফিস-আদালত সহ বাড়ি-ঘরের পাশে গাছ লাগানোর
অনেক সুযোগ আছে। যেখানে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগিয়ে, সম্পদশালী হওয়ার সাথে সাথে, পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক সুন্দরের
দেশ হিসাবে, নাম দিতে পারি গ্রিন কান্টি অব ওয়ার্ল্ড। দেশের গড় আয়ু এখন ৭৩.৪, নির্বিচারে গাছ কাঠা বন্ধ থাকলে এবং প্রচুর
পরিমাণে সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করলে,গড় আয়ু অনেক বেড়ে যাবে,রোগীর সংখ্যা কমবে,পরিবেশ
উন্নত হবে, মানুষের সাস্থ্য ও চেহারা আরও সুন্দর হবে।

পরিবেশ উন্নয়ন

আমাকে প্রায় পৃথিবীর সকল দেশেই প্রশ্ন করা হয়েছে, কোন দেশটি সুন্দর, অবশ্যই আমার দেশের কোনো বিষয়েই তুলনা নাই।
ফেলােশীপ, ফ্রেন্ডশীপ, ফেমিলিয়ার, রিলেশনশীপ, ব্রাদারহুড সহ সকল বিষয়ে আমরা অগ্রগামী, এখনও আমরা অপরিচিত ছয়
জনে মিলে একটি সি এন জি গাড়ি চড়ে বিভিন্ন জায়গায় সাচ্চন্ধে ছেলে মেয়ে এক সাথে ভ্রমণ করছি, যা পৃথিবীর কোথাও নাই।
ছোটবেলা থেকেই বৃক্ষরােপণের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম, ১৯৮৪ সাল থেকে সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে হাওয় একালায় নিজ হাতে লক্ষ লক্ষ গাছ লাগিয়ে উপকৃত হয়েছি।

সেই সাথে সরকার আমার কাজকে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং দেশে প্রথম বারের মত প্রধানমন্ত্রীর পুরষ্কার ঘোষণা করেন,
সাসটেইনেবল প্রোগ্রাম ও পুরুষ্কার দেওয়ার নিয়ম প্রবর্তন করা হয়। আমাকে জাতীয় প্রথম স্বর্ণপদক দিয়ে ১৯৯৭ সালে
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পুরষ্কার দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হলো এধরনের কর্মসূচি।

আশা করছি সিলেট বিভাগে আগামীতে আমরা কম্পিটিশন করে গাছ লাগাবো এ কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার প্রয়াস থাকবে। প্রবনতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ছে, বেশি জায়গা নিয়ে বাড়ি তৈরী করা, যা শুভ নয়। সরকারীভাবে এখনি ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে এমন অব্যবস্থা না থাকে।

জাতি বাচলে দেশ বাচবে, সবুজ দেশ হিসেবে পরিচিত করতে পারলে, একদিকে যেমন আমরা সুখি সমৃদ্ধশালী হব, অন্য দিকে দারিদ্রতা কমে, পুষ্টিহীনতা কমবে। বাসস্থান উন্নত হবে এবং যুব সমাজ এ কর্মসূচিতে আগ্রহী হবে। দারীদ্রবিমোচন সহ সমাজিক অবক্ষয়ে তাদের ভূমিকা আসবে। সরকারী গাছ শুধুই নয়, ব্যাক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটলেও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন।

তাহলে সমাজ সচেতন হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে স্কুল-কলেজ, অফিস- আদালত,পতিত সকল জায়গায় সম্মিলিত ভাবে আমরা ব্যপক বৃক্ষরুপন করে পৃথিবীতে পরিচিত হই। সরকারী কর্মসূচী চাঙ্গা করা আছে, শুধু মাত্র সচেনতা বৃদ্ধি করে, আমরা বলতে পারি, সম্পদ শালি ও গ্রীন কান্টির অধিবাসি। আমিন

লেখক: জামিল চৌধুরী

সভাপতি সিলেট জেলা শাখা,ক্যাব


মতামত কলামের লেখা পাঠকের নিজস্ব মতামত।
এর মাধ্যমে ভোক্তাকন্ঠের নিজস্ব মতামত প্রতিফলিত হয় না বরং মতামতের জন্য লেখক এককভাবে দায়ী।

ডিসক্লেইমার(Disclaimer)

ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সংবাদ দেখুন || ভোক্তাকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *