পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সেই সঙ্গে মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে দেশটিতে।
এদিকে পার্শ্ববর্তী দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বাংলাদেশ। ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি সভাও করা হয়েছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ওই সভায় মানুষের মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সব বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে করোনা সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
‘পার্শ্ববর্তী দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গঠিত ওয়ার্ড কমিটিকে অধিকতর সক্রিয়করণ’ বিষয়ে চিঠি বুধবার (১০ নভেম্বর) সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় করণীয় নির্ধারণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে গত ২৬ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জুম অ্যাপের মাধ্যমে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মতামত ব্যক্ত করা হয় যে, ভারতসহ অন্যান্য দেশে কোডিড-১৯ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও আসন্ন শীত মৌসুমে ঠাণ্ডা, কাশি ও শ্বাসজনিত রোগের প্রবণতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণের মধ্যে বর্তমানে মাস্ক ব্যবহারের শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে উক্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ইতোপূর্বে গঠিত সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিটি, পৌরসভার ওয়ার্ড কমিটি এবং ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড কমিটিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।
সেই সঙ্গে সর্বস্তরের জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন ও মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ; হাট-বাজার, চায়ের দোকান বা জনসমাগম হয় এমন স্থানে ভিড় পরিহারের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, গতবছর শীত মৌসুমে করোনার প্রকোপ কম থাকলেও নিকটস্থ ও পার্শ্ববর্তী দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টিকা কার্যক্রমও জোরদার করা হচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করছে সরকার।
ভ্যাকসিন গ্রহণে সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ; বয়স্ক ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে নিয়ে আসতে সহায়তা করার নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
স্বাস্থ্যবিধি পালন, মাস্ক ব্যবহার, ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয়ে এলাকার হাট-বাজারে ও অন্যান্য স্থানে মাইকিং বা প্রচারের ব্যবস্থা করতে বলা হয় চিঠিতে।
পাশাপাশি সব ধরনের সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করা এবং করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সব সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেওয়া হয়েছে।