ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে গত কয়েক মাসে দেশে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। আয়ও কিছুটা বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের। তবে যে হারে পণ্যমূল্য বেড়েছে, সে হারে আয় বাড়েনি তাদের। এতে সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে চাপে আছেন তারা। কারণ, খাদ্যপণ্য কিনতেই তাদের মজুরির বড় অংশ খরচ হয়।
গত তিন মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে মজুরি বেড়েছে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ও মার্চে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ হারে। অন্যদিকে, এ তিন মাসে সার্বিক মূল্যস্ম্ফীতি বেড়েছে যথাক্রমে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ৬ দশমিক ১৭ ও ৬ দশমিক ২২ শতাংশ হারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মজুরি সূচক নির্ধারণে কম মজুরির দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকের কর্মঘণ্টা কিংবা হাজিরাভিত্তিক দৈনিক আয়কে বিবেচনা করে থাকে বিবিএস। মাসিক কিংবা চুক্তিভিত্তিক আয়কে মজুরির হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। মজুরির হার নির্ধারণে কৃষি, শিল্প ও সেবা- বড় এ তিন খাতের ৪৪টি পেশাকে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে কৃষি খাতের পেশা ১১টি, শিল্পের ২২টি ও সেবা খাতের ১১টি পেশা রয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ম্ফীতি বেড়েছে বেশি হারে। গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ম্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২২ এবং ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আবার শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ম্ফীতি বেশি। গত দুই মাসে শহরাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ম্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৩০ এবং ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অথচ ওই দুই মাসে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ম্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৬২ এবং ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ।
সাধারণত, দরিদ্র মানুষের মূল্যস্ম্ফীতি গড় মূল্যস্ম্ফীতির তুলনায় বেশি। কারণ খাদ্যপণ্য কিনতেই তাদের আয়ের বড় অংশ চলে যায়। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের মোট আয়ের ৬০ শতাংশ ব্যয় করে খাদ্যপণ্য সংগ্রহে। এমনকি বিবিএসের তথ্যেও বলা হয়েছে, খাদ্য গ্রহণে মোট আয়ের ৪৭ শতাংশ ব্যয় হয়।