ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর মাঝিকান্দি এবং মুন্সীগঞ্জের মাওয়া শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে টানা সাড়ে ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) মাঝিরঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাহ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
দুর্ঘটনা এড়াতে রোববার রাত ১০টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এবং সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ফেরি বন্ধ থাকায় মাঝিকান্দি ঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসসহ পাঁচ শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে। বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘ সময় আটকে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী, চালক ও যানবাহনের শ্রমিকরা।
বিআইডব্লিউটিসি মাঝিকান্দি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর শরীয়তপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে স্রোত ও ঢেউ বেড়েছে। তীব্র স্রোত ও নৌপথের টার্নিং পয়েন্টে ঘূর্ণন থাকায় গত রোববার রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বিআইডব্লিটিসি। নদীর স্রোত ও ঘূর্ণন না কমলেও নৌপথের দুই ঘাটে কমপক্ষে এক হাজার গাড়ি আটকা পড়ে থাকায় সকাল থেকে ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিসি। আবার সোমবার স্রোত বেড়ে যাওয়ায় পরের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফের ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। নদীর স্রোত কমলে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিসি।
এর আগে রোববার ভোরে তীব্র স্রোতে শরীয়তপুরের টার্নিং পয়েন্টে যাত্রীবাহী দুই চলন্ত ফেরি বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামালের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন। দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এই নৌপথে ছোট-বড় পাঁচটি ফেরি চলছে।
মাঝিরঘাট ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আরিফ হোসেন বলেন, ‘ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত মাঝিকান্দি প্রান্তে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়ে। পারাপার বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় ঘাট এলাকায় খোলা জায়গায় বৃষ্টির মধ্যে যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে নারী, বৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি বেশি। শৌচাগার ও খাবার হোটেলের অভাব ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে।’
বিআইডব্লিউটিসি’র মাঝিকান্দি ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্রোত কমে আসায় ফেরি চালু করা হয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো আগে পারাপার করা হচ্ছে।’