ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: নির্মাণশিল্পের রডসহ লৌহ জাতীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ)।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের কাস্টমস সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক। এ সময় এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফ্রেইট ফরওয়াডিং অ্যাসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা তাদের দাবি পেশ করেন।
বিএসবিআরএর কামাল উদ্দিন বলেন, স্ক্রাপ জাহাজের আন্তর্জাতিক বাজার দর টন প্রতি ৩৫০ ডলার থেকে ৬৩০ ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা থেকে ৮৮ টাকা হওয়ায় জাহাজের মূল্য আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে টন প্রতি রডসহ অন্যান্য লৌহ সামগ্রীর মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার বিরূপ প্রভাব দেশের অবকাঠামো বিনির্মাণ খাতের ওপর পড়ায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাই রডসহ লৌহ জাতীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানি শুল্ক টন প্রতি ১৫শ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে সরবরাহ পর্যায়ে প্রতি টন রডের ওপর প্রযোজ্য মূসক এক হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি আমাদের প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিলে রডের বাজার স্থিতিশীল হবে।
সংগঠনের অপর ভাইস প্রেসিডেন্ট জহিরুল ইসলাম পুরাতন জাহাজের সঙ্গে আসা লুব ওয়েলের শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান। প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, সমুদ্রগামী জাহাজ স্ক্র্যাপ ঘোষণার পর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছাতে স্বল্প পরিমাণ তৈল জাতীয় পদার্থ থাকাটা স্বাভাবিক। জাহাজে কয়েক রকমের তৈল পাওয়া যায়। যার মধ্যে ফার্নেস অয়েল, লুব অয়েল ও ডিজেল অয়েল প্রভৃতি। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের না জানিয়ে কাস্টম কর্তৃপক্ষ সাধারণ বিজ্ঞপ্তি নং-৫৫ এর আলোকে ব্যবহৃত লুব অয়েলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ অবচয় সুবিধা প্রত্যাহার করে নতুন ও পুরাতন লুব অয়েলের জন্য একই হারে শুল্ক আদায় করছে। যা দিয়ে তৈল জাতীয় পদার্থ বিক্রি করে পরিশোধিত শুল্কের টাকা উঠে না। এ অবস্থায় সাধারণ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে পোড়া মবিল ও তৈল বর্জ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
আলোচনায় বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশি পতাকাবাহী স্থানীয় মালিকানাধীন জাহাজে বিদেশে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে প্রাপ্ত পরিবহন ভাড়ার ওপর উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আব্দুল বাতেন এ বিষয়ে বলেন, দেশের সমুদ্রগামী জাহাজ পরিবহনের ব্যবসা সম্প্রসারণে ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে পরিবহন ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য ৫ শতাংশ উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানাই। একই সঙ্গে নতুন সমুদ্রগামী জাহাজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে এক শতাংশ অগ্রিম আয়কর মওকুফ করার প্রস্তাব করছি।