ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: বৈদেশিক মুদ্রায় রপ্তানি আয় আসার পর এক দিনের মধ্যে নগদায়নের নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া এক ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি করা বিলের অর্থ অন্য ব্যাংকে আসলে ওই বৈদেশিক মুদ্রা রপ্তানিকারকের ব্যাংকে স্থানান্তর করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত দুটি সার্কুলার জারি করেছে। রোববার (২৯ মে) বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়োজিত সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও প্রিন্সিপাল অফিসে ওই সার্কুলার দুটি পাঠানো হয়।
সার্কুলারে রপ্তানি আয় দ্বারা ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দায় নির্বাহের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অংশ সিংগেলপুলে সংরক্ষণের পূর্বে স্থানীয় মূল্য সংযোজন অংশ নগদায়নের জন্য বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাবে (বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবই ‘নস্ট্রো হিসাব’) রপ্তানি আয় জমা হওয়ার এক কর্মদিবসের মধ্যে নগদায়ন এবং সিংগেলপুলে জমার কাজ করতে হবে।
একই দিন অপর এক সার্কুলারে ভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় আনার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন হলে, কিংবা অন্য ব্যাংকের বা অফশোর ব্যাংকিং অপারেশনের মাধ্যমে রপ্তানি বিল বৈদেশিক মুদ্রায় ডিসকাউন্টিং (নির্দিষ্ট কমিশন নিয়ে রপ্তানি আদেশের বিপরীতে সৃষ্ট বিলের বিপরীতে অর্থায়ন) করা হলে ওই বৈদেশিক মুদ্রা রপ্তানিকারকের ব্যাংকে স্থানান্তর করতে হবে। একই ব্যবস্থা বায়িং এজেন্টের মাধ্যমে রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করা হয়েছে।
রপ্তানি আয়ের নগদায়নযোগ্য অংশ এক কর্মদিবসের মধ্যে রপ্তানিকারকের ব্যাংক টাকায় রূপান্তর করে রপ্তানিকারকের হিসাবে জমা করার জন্য সার্কুলারে বলা হয়েছে।
রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন নির্দেশনার ফলে রপ্তানিকারকের ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন এবং তা স্বল্প সময়ে নগদায়ন করা যাবে। এতে রপ্তানিকারকের চলতি মূলধন চাহিদা সহজে নিষ্পত্তি করা সহজ হবে।
জানা গেছে, রপ্তানিকারকদের মধ্যে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা পণ্য রপ্তানির পর সেই বিল ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে দেন। ব্যাংকগুলোতে অফশোর তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে রপ্তানিকারকদের বিল কিনে টাকা দেয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট বিলের পুরোটাই কিনে নিতে পারে। রপ্তানি বিলের অর্থ এলে তা থেকে সমন্বয় করে ব্যাংকগুলো। নতুন নির্দেশনার পর রপ্তানি বিলের অর্থ যে ব্যাংকেই আসুক না কেন রপ্তানি করা ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে দিতে হবে। ব্যাংক ওই অর্থ এক দিনের মধ্যে অর্থ নগদায়ন করে রপ্তানিকারকদের হিসাবে জমা করবে।
এর আগে ডলারের বাজারে অস্থিরতা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে এ বিষয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। চিঠিতে বলা হয়, রপ্তানিকারকের ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানিমূল্য ডিসকাউন্টটিংসহ রপ্তানি মূল্য ওই ব্যাংকেই বিক্রি করতে হবে। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।