মানুষ হিসেবে আমরা নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ দাবি করি। তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে সবকিছুই যেন আমাদের হাতের মুঠোয়। যেকোনো সমস্যা সমাধানের বুদ্ধিমত্তাই প্রমাণ করে আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব। কিন্তু এত কিছুর পরও কিছু দিক দিয়ে আমরা যেন খুবই অসহায়। পৃথিবী আর মানবসভ্যতার বয়স দিনকে দিন যত বাড়ছে, আমরা ততই কিছু অমীমাংসিত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে চলছি, যার সমাধান বের করতে গিয়ে প্রায়শই আমাদেরকে অনেক জটিলতার বাঁধা পেরোতে হচ্ছে। বিশ্বের বড় বড় নেতৃবৃন্দ আজ নিজেদের অস্তিত্বটুকু টিকিয়ে রাখতে সবাই একসাথে হাত মেলাচ্ছেন। আর সেই প্রধান সমস্যা, যা কি না আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নে হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে, সেটা হলো “জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা”। এই জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক গুলো কারনের মাঝে অন্যতম এক কারন হচ্ছে প্লাস্টিকের লাগামহীন ব্যবহার। যা আমাদের পুরো জলবায়ু পরিবর্তনের উপর প্রভাব রাখছে।
রোয়ার মিডিয়ার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়ঃ প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য পরিবেশের জন্য কী পরিমাণ হুমকিস্বরুপ! প্লাস্টিক পদার্থের বিয়োজন খুবই কষ্টসাধ্য একটি ব্যাপার। কিছু প্লাস্টিক পদার্থের বিয়োজিত হতে প্রায় হাজার বছরও লেগে যায়। যে জিনিসের বিয়োজিত হতে যত সময় লাগে সে জিনিসটি পরিবেশের জন্য তত বড় হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আমাদের দেশে আমরা এর প্রভাব খুব ভালভাবেই বুঝতে পারি প্রচুর বৃষ্টিপাতের পর। বিভিন্ন ডোবা, নালা, খাল-বিল, ড্রেনে গিয়ে প্লাস্টিক পদার্থগুলো জমা হয়। যেহেতু এসব পদার্থ সহজে বিয়োজিত হয় না, তাই বৃষ্টির পর এসব পদার্থ পয়ঃনিষ্কাশনে প্রভাব ফেলে। ডায়রিয়া, কলেরাসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হয় শহরবাসী। জীবনযাপন হয়ে ওঠে আরো কষ্টসাধ্য। চোখ বন্ধ করে নিজেকে প্রশ্ন করুন তো, এসবের জন্য দায়ী কে বা কারা?
খুব সহজ উত্তর ; আমরা নিজেরা। আসছে বর্ষা মৌসুমে দেখা মিলবে বড় বড় শহর গুলোতে জলাবদ্ধতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা মিলবে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্ধারিত ড্রেনগুলোতে প্লাস্টিকের একচ্ছত্র আধিপত্য। ফলশ্রুতিতে এই সকল ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হয়ে জলাবদ্ধতায় রুপ নেয়। আমরা শুধু তখন সিটি কর্পোরেশন কে দোষারোপ করে নিজেদের কে দ্বায়মুক্তির হাসি দিয়ে ঘরে ফিরি।
আসুন আসছে বর্ষা মৌসুমের আগেই নিজেদের আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি এবং পরিবেশ কে সুন্দর করে গড়ে তুলি।