।। কৃষি ডেস্ক ।।
ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের বারবন রেড টার্কি, গায়ের পালক লাল-সাদা বর্ণের। স্বভাবজাত সাধারণ টার্কির মতো হলেও এরা জাতে অনেক উন্নত। লালন-পালন ও খরচ সাধারণ হলেও মাংস উৎপাদন হয় দিগুণ। বাংলাদেশে এ বারবন রেড টার্কি মাত্র ৭ থেকে ৮টি খামারে লালন-পালন হয়ে থাকে। লাল টার্কি নামেই ডাকেন স্থানীয়রা।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি গ্রামে ডক্টরস্ টার্কি ফার্ম বারবন রেড টার্কি পালন করছেন। ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. এমরানুল হক মন্ডল জানান, ২ বছর আগে লন্ডন থেকে বারবন রেড টার্কির একশ ও বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলা থেকে ২শ’ ডিম সংগ্রহ করে তা ইনকিউবেটরে সাহায্যে বাচ্চা ফুটিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। বাকীগুলো থেকে পর্যায়ক্রমে সফলতা এসেছে। বর্তমানে তার ফার্মে প্রাপ্ত বয়স্ক প্রায় ৩শ’র মতো বারবন রেড টার্কি রয়েছে।
এছাড়াও দুই বছরে প্রায় ৬শ’টির বেশি টার্কি বিক্রি করে ভালো আয় হয়েছে। বর্তমানে এ টার্কির বাজার মূল্য সাধারণ টার্কির চেয়ে বেশি। যেখানে এক মাস বয়সী সাধারণ টার্কির বাচ্চা ৩শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা জোড়া বিক্রি হয় সেখানে এক মাস বয়সী লাল টার্কি একটি বাচ্চা ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। আর প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ টার্কি যেখানে ৭-৮ কেজি ওজনের হয়, সেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক লাল টার্কির ওজন ১৪-১৫ কেজি ছাড়িয়ে যায়।
বারবন রেড ও সাধারণ টার্কি খাবারের মধ্যেও কোন পার্থক্য নেই। এরা দিনে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার খেয়ে থাকে। সাধারণ টার্কির মতোই বারবন লাল টার্কি ঘাস লতাপাতা ছাড়াও পোল্ট্রি ফিড খেয়ে থাকে। তিনি জানান, এ ২৫০ গ্রাম খাবারের মধ্যে খামার থেকে ১৩০ গ্রাম খাবার সরবরাহ করা হয়, বাকী খাবার তারা প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে পেয়ে থাকে। এতে খাবার হিসেবে দৈনিক প্রতি বারবন লাল টার্কির পেছনে ব্যয় হয় সাড়ে তিন থেকে চার টাকা।
উদ্যোক্তা ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বারবন লাল টার্কির আয়ুস্কাল ৬ বছর। তবে এরা চার বছর পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে ডিম দিয়ে থাকে। এরা একাধারে ১০-১২ দিন ডিম দেয়ার পর কিছুদিন ডিম দেয়া বন্ধ রাখে। তবে রেড বারবন টার্কির মাংস খুব সুস্বাদু।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর জানায়, বাংলাদেশে বারবন রেড টার্কির খুবই সম্ভাবনা রয়েছে। এদের গঠন দৃষ্টি নন্দন ও মাংস উৎপাদনে অন্যান্য টার্কির চেয়ে দ্বিগুণ। দেশীয় আবহাওয়ায় এ টার্কির চাষ করলে অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব।
সূত্র জানিয়েছে, সরকার লাল টার্কি পালনে উৎসাহ দিচ্ছে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার দ্বারস্থ হলে টার্কি চাষে সহায়তা ও পরামর্শ পাওয়া যাবে।
।