ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ইন্টারনেটের প্যাকেজের ক্ষেত্রে নতুন যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে, তা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে বলে মনে করে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ মানুষ, শ্রমজীবী, বেকার, শিক্ষার্থী এমনকি নিম্নআয়ের মানুষজন মোবাইল ইন্টারনেটের বড় গ্রাহক। এ সকল গ্রাহকদের চাহিদাও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেজ যা স্বল্প মূল্যে গ্রাহকরা কিনতে পারে, এই শ্রেণীর গ্রাহকের সংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ। বিটিআরসি যদি এমন সিদ্ধান্ত নিত যে তিন দিনের জন্য বর্তমান যে প্যাকেজ বা ক্ষুদ্র প্যাকেজের যে মূল্য ঠিক সমপরিমাণ মূল্য দিয়েই সাত দিন বা ১৫ দিনের প্যাকেজ গ্রাহক কিনতে পারবে সে ক্ষেত্রে বিটিআরসিকে আমরা সাধুবাদ জানাতাম।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে ৭ দিনের সর্বনিম্ন একটি প্যাকেজের মূল্য ১৪৯ টাকা, ৩০ দিনের প্যাকেজের সর্বনিম্ন মূল্য ৭৯৯ টাকা। আর আনলিমিটেড প্যাকেজ সাধারণত কর্পোরেটরা ব্যবহার করে যার মূল্য ১১০০ টাকার উপরে। স্বল্প আয়ের এমনকি শিক্ষার্থী বেকার তরুণ-তরণী, শ্রমজীবীদের পক্ষে ২০০ বা ৩০০ টাকা দিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করা অসম্ভব। আজকে প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছেন তা কেবলমাত্র এ সকল গ্রাহকদের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। আগামীতে সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে যাচ্ছে ,সেখানে দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে সরকার ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে আনতে চায়।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিটিআরসি উল্টো পথে হাঁটছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ কমে যেতে পারে। গ্রাহকের চাহিদা এবং পছন্দের উপর কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে হয়তো মোবাইল অপারেটর রা লাভবান হবে। কারণ ইন্টারনেটের খরচ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিটিআরসি যদি প্যাকেজের সংখ্যা কমাতে চায় তাহলে ৪০টি কেন? ব্রডব্যান্ডের ন্যায় এক দেশ এক রেট নয় কেন? চারটি অপারেটরের প্যাকেজের মূল্য এক নয় কেন? অব্যবহৃত ডাটা গ্রাহক ফেরত পায় না কেন? প্রকৃতপক্ষে কমিশন এ সকল গ্রাহকদের বিশেষ করে সাধারণ শ্রেণী গ্রাহকদের কথা আমলে নেয়নি। গ্রাহকের চাহিদা এবং পছন্দের কথা এবং সামর্থ্য বিবেচনা করে কমিশন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য কমিশনের কাছে আমরা বিনীত অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই যে, আপনি যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছেন এবং যার উপর ভিত্তি করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাচ্ছেন সেই পথে বিটিআরসির মোবাইল ইন্টারনেট ডাটা প্যাকেজের সিদ্ধান্ত বাধার সৃষ্টি করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এ ব্যাপারে আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
-এসএম