ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: এইচএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন রাজধানীর রামপুরা ব্রিজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার কারণে আগামীকাল আর সড়ক অবরোধ করা হবে না। তবে আগামীকাল বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করব আমরা। মানববন্ধন হবে নিরাপদ সড়কের দাবি এবং শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিনের মৃত্যুর প্রতিবাদে। পরবর্তী কর্মসূচি আগামীকাল জানানো হবে।
তারা আরও বলেন, পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সড়ক অবরোধ করব না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই আমাদের কর্মসূচি শেষ করা হবে।
এদিকে রামপুরা থেকে শিক্ষার্থীরা ১১টি নতুন দাবি জানিয়েছেন
১. সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাঈনউদ্দিনের হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
২. সারা দেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে নিশ্চিত করতে হবে। হাফপাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
৩. গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় সব পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুয়ায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।
৭. শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তি ভিত্তিতে বাস চালানো বন্ধ করে টিকেট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
১০. ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে।
১১. মাদকাসক্তি নিরসনে সমাজজুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।