ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: শর্তসাপেক্ষে রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হয়েছে হাফ ভাড়া দেওয়ার সুবিধা। তবে ঢাকার বাইরে এ সুবিধা না দেওয়ায় চট্টগ্রামে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১ ডিসেম্বর) নগরের চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী রোববার (৫ ডিসেম্বর) বৈঠকে বসছেন পরিবহন মালিকরা। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর। তিনি চট্টগ্রামের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে হাফ ভাড়ার বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত দেবেন। অবশ্য এর আগে দুই/এক দিনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে মালিকদের একটা বৈঠকের কথাও রয়েছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, আগামী রোববার ঢাকার পরিবহন মালিক নেতাদের সঙ্গে একটা বৈঠক আছে। এর আগে স্থানীয়ভাবে মালিকদের নিয়ে আরেকটি বৈঠক হবে। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে তা জানা যায়নি।
জানা গেছে, হাফ ভাড়ার সুবিধার দাবিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকায় জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখানে তারা অবস্থান নিয়ে দাবির সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনরত কলেজশিক্ষার্থী ইসতিয়াক রানা বলেন, চট্টগ্রামের অবস্থান কি বাংলাদেশের বাইরে? ঢাকার শিক্ষার্থীরা অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার সুবিধা পেলে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা পাবে না কেন? আমরা অবিলম্বে চট্টগ্রামেও শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। না হয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে আন্দোলন করেছে। তবে আন্দোলনে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে দেখবে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। গত ৩ নভেম্বর রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়।
এ নিয়ে পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটের ঘোষণা না দেওয়া হলেও ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে গণ ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৭ নভেম্বর ডিজেলচালিত গাড়িতে ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণার পর সারাদেশে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়। এরপর থেকে হাফ ভাড়ার সুবিধা না দেওয়ায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তাদের টানা আন্দোলনের মুখে গতকাল (মঙ্গলবার) এক সংবাদ সম্মেলনে শুধুমাত্র রাজধানীতে শর্তসাপেক্ষে হাফ ভাড়া সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দেন পরিবহন মালিকরা।