ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সারা বছর ড্রেজিং করার কথা বলা হলেও ঢাকা-বরিশাল নৌপথে নাব্য সংকট নিরসন হচ্ছে না। রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথের বিভিন্ন স্থান এখন ঝুঁকিপূর্ণ।
বেশ কয়েকটি স্থানে নাব্যতা সংকট এতটাই তীব্র যে, ওইসব এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচলের সময় চালকরা আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন। বিশেষ করে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে লঞ্চের মাস্টার এবং মালিকেরা জানিয়েছেন।
এদিকে, শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এবং প্রয়োজনীয় ড্রেজিং না হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি নৌযান মালিকদের জ্বালানি তেলের খরচও বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। এতে যাত্রীরা যেমন বিব্রত হন, তেমনই মালিকপক্ষ আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লঞ্চ মাস্টার জানান, বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং করে যে পরিমাণ পলি অপসারণের কথা বলে, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে অনেক কম পলি অপসারণ করা হয়। এছাড়া আনুষঙ্গিক খরচ কমাতে ড্রেজিংয়ের সময় নদীর পলি নদীতেই ফেলা হয়। এর ফলে তিন-চার মাস পর ওইসব স্থানে ফের নাব্যতা সংকট দেখা দেয়।
একটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চের মাস্টার জানান, ঢাকা-বরিশাল নৌপথের ছয়/সাতটি স্থানে প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে তীব্র নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে বাউশিয়া-নলবুনিয়া চ্যানেল, বরিশালের শায়েস্তাবাদ সংলগ্ন কীর্তনখোলা ও আড়িয়াল খাঁসহ তিন নদীর মোহনায় পলি মাটি জমে নাব্য সংকট দেখা দেয়। এছাড়া হিজলার গ্রিন বিকন এলাকা, মেহেন্দিগঞ্জের কাটাখালি চ্যানেলের ১ নং লাল বয়া ও ২ নং স্পারিক্যাল বয়ার কাছে পানি কম। তাই ওই এলাকা থেকে লঞ্চ অতিক্রমের সময় নৌযানের মাস্টার ও ড্রাইভারকে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।
লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় বেশি ও ৬০০ লিটার তেল বেশি ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে নৌযান মালিকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং অতিরিক্ত সময় ব্যয় হওয়ায় যাত্রীরাও নৌপথ ছেড়ে সড়কের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে নাব্যতা সংকট সৃষ্টির জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র অপরিকল্পিত ডেজিং ব্যবস্থা দায়ী।