ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে ৭ শতাধিক যানবাহন। এসব যানবাহনগুলোর মধ্যে দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান রয়েছে। দূরপাল্লার বাস ৬-৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরির দেখা পেলেও পণ্যবাহী ট্রাকের ফেরির নাগাল পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ঘাট এলাকায় অপেক্ষা করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় ৫ শতাধিক পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার এলাকায় ২ শতাধিক দূরপাল্লার বাস নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সারি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে এই যানজটের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এ নৌরুটে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ঘাট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। নতুন করে নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ৬ নম্বর ঘাটটিও বন্ধ। ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
এ ছাড়া এই নৌপথে পানি কমে যাওয়ায় অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে উভয় ঘাটে একাধিক ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় পন্টুন থেকে যানবাহনগুলো ওঠানামা করতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কাছে আটকে থাকা একাধিক ট্রাক চালক বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট মানেই ভোগান্তি। গতকাল দুপুরে আমরা ঘাট এলাকায় আসলেও এখন পর্যন্ত ফেরির দেখা পাইনি। কখন পাব সেটাও বলতে পারছি না। প্রচণ্ড রোদ আর ভ্যাপসা গরমে খোলা আকাশের নীচে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী দিগন্ত পরিবহনের যাত্রী ইলিয়াস শেখ বলেন, ৫ ঘণ্টা ধরে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় আটকে আছি। প্রচণ্ড গরমে বাসের মধ্যে বসে থাকাও কষ্ট। স্ত্রী ও শিশু বাচ্চা সঙ্গে থাকায় বাস থেকে নেমে যেতেও পারছি না।
বিআইডব্লিউটিএর সহকারী প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য উভয় ঘাটে একাধিক ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। আশাকরি খুব দ্রুত দৌলতদিয়া ঘাট স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুট স্বাভাবিক না হওয়ায় ওই রুটের ট্রাকগুলো দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করছে। এতে দৌলতদিয়ায় বাড়তি চাপ পড়ছে। এ ছাড়া ঘাট সংকট ও যানবাহনের তুলনায় ফেরি কম থাকায় দৌলতদিয়ায় ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফেরির মধ্যে ১৭টি চলাচল করছে।