ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে, তাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সাড়ে তিন মাস ট্রেন বন্ধ থাকবে। এই রুটে দিনে ২৬টি ট্রেন চলে। একই সময়ে সড়কপথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এ কারণে সড়কে যানজট লেগেই থাকছে। এমন সময়ে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় যানজট আরও তীব্র হবে, ভোগান্তিও বাড়বে সমান তালে।
ট্রেন বন্ধের প্রস্তাব রেল মহাপরিচালকের দপ্তর হয়ে গত রোববার গিয়েছে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের কাছে। ট্রেন বন্ধে সম্মতি দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলে ট্রেন বন্ধ হবে। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রস্তাবে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধের অনুরোধ করা হয়েছে।
১৮৮৫ সাল থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলছে। ১২ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ ডাবল লাইন ডুয়েলগেজে রূপান্তরে প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প চলছে। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় ঢাকার কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার নতুন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ চলছে। আগামী বছরের জুনে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথে ট্রেন চালাতে চায় সরকার।
কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ এবং পদ্মা সেতুর রেললাইন একই সমান্তরালে গিয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের দুই পাশে দুটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। বিদ্যমান লাইন ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গেণ্ডারিয়া-ঢাকা অংশের কাজের অগ্রগতি তুলনামূলক কম। ভূগর্ভস্থ পরিষেবা লাইন স্থানান্তরের কাজের গতিও সন্তোষজনক নয়। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা ট্রেনের নিরাপত্তায় পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে ঠিকাদার প্রয়োজনীয় নির্মাণযন্ত্র ও সরঞ্জাম ওই এলাকায় স্থাপন করতে পারবে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, সাড়ে তিন মাস ট্রেন চলাচল বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে আশা করছেন, আগামী বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে। তিনি জানান, ১ ডিসেম্বর সম্ভব না হলেও এর কয়েক দিনের মধ্যে ট্রেন বন্ধ হবে।
সড়কে নির্মাণকাজ চলায় ট্রেন বন্ধের ফলে যানজটে দুর্ভোগ বাড়বে। এই রুটের হাজার ত্রিশেক যাত্রী সড়কে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। তাই ট্রেন বন্ধে বিকল্প কী- প্রশ্নে প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, ভারী নির্মাণকাজের সময়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চললে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। নিরাপত্তার স্বার্থেই ট্রেন বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে।