ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
এ বছর সে বরাদ্দ নেমে এসেছে ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কম।
এবারের বাজেটের আকার জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
২০২২-২৩ বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনার পরিমান রয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মধ্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) হচ্ছে অন্যতম। ভর্তুকির দিক থেকে ২য় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে আবিষ্কৃত ২৮টি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টিতে উৎপাদন চলছে। ২০০৯ সালে দেশে দৈনিক ১ হাজার ৭৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো, যা বেড়ে বর্তমানে ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দৈনিক প্রায় ৬০০-৭৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) হিসেবে আমদানিপূর্বক রিগ্যাসিফাইকরত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে।
তবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় বাজেট (ভর্তুকি) চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ৫০ তম সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু প্রকল্প হাতে আছে। তাই বড় বাজেট চাওয়া হয়েছে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়, গত (২০২১-২২) অর্থবছরের চেয়ে তিন হাজার ৪২৯ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ চেয়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয়টি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।
মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৭১১. ৯০ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ খাতে ৬০টি প্রকল্পে এ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে নয় হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল তিন হাজার ৫৭২ কোটি টাকা এবং পিএ (প্রকল্প সাহায্য) ১৪ হাজার ৭৩১ কোটি ১১ লাখ টাকা।
তবে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট বিষয়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহে ভোক্তাকণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নের জন্য বাজেটের বরাদ্দটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই খাত উন্নয়নের জন্য যে ব্যয় ধরা হচ্ছে, সেই খাতের অযৌক্তিক এবং লুণ্ঠনমূলক ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা। এই নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যেহেতু বাজেটে উপেক্ষিত থাকছে বরাবরের মতোই, তার মানে এই অযৌক্তিক এবং লুন্ঠনমূলক ব্যয়কে বাজেটের বরাদ্দ বৃদ্ধির অর্থলিপ্সা হিসেবে উৎসাহিত করছে বলে আমার মনে হয়।’
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২০২২-২৩ নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা।