বাজারে মসলা ‘পর্যাপ্ত পরিমাণে’ মজুদ রয়েছে দাবি করে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি জানিয়েছে আসন্ন ঈদুল আযহায় বাজারে মসলার দাম বাড়ার ‘কোনো শঙ্কা নেই’।
ব্যবসায়ীদের কেউ বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে সমিতির পক্ষ থেকে।
বুধবার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে এফবিসিসিআই কর্তৃক আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা।
সভায় বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর পরিমাণে মসলা মজুত রয়েছে। কোরবানির আগে মসলার কোনো সঙ্কট নেই, তাই দাম বাড়বে না।
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো. বশির উদ্দিন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে যদি কোন ব্যবসায়ী অসৎভাবে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালান, তবে সমিতির নিয়ম অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে সারাবিশ্বেই একটি অস্বভাবিক পরিস্থিতি চলছে। এমন সময়ে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদর অসততার দায় এফবিসিসিআই নেবে না। প্রায় ৯৯ শতাংশ সৎ ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত ভাবে অসৎ ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করবে।
মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এফবিসিসিআই প্রত্যাশা করে, ঈদের আগে ব্যবসায়ীরা দাম না বাড়িয়ে বড়ং কমিয়ে আনবে। এই অনুশীলনটা মৌলভীবাজার থেকে শুরু হোক।
এসময় তিনি খুচরা বাজারের পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে দোকান মালিক সমিতিকে এগিয়ে আসার তাগিদ দেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কন্ট্রোল অব এসেনশিয়াল কমোডিটি আইনটি অনেক আগের। গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তাই আইনটির সংশোধন করা দরকার। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরণ অধিদপ্তরের সাথে আলোচনাও হয়েছে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এজন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কর—শুল্কের বোঝা কমিয়ে বিলাসী দ্রব্যের ওপর বাড়তি কর আরোপ করা যেতে পারে।
বর্তমানে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগ উঠছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, টাকা আছে বলেই কী ব্যবসায়ীদের সব ধরনের ব্যবসা করতে হবে? এই বিষয়টা নিয়ে সরকাররের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করা হবে যাতে যে কেউ চাইলেই যেন যেকোনো ধরনের ব্যবসায় না নামতে পারে।
ডলারের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডলারের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে কিছু ব্যাংক বাড়তি মুনাফা করেছে। যা ঠিক নয়।
সভায় এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ—সভাপতি ও এফবিসিসিআই বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ১ শতাংশ অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সমাজকে অপবাদ নিতে হচ্ছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
রোজার শেষদিকে সয়াবিন তেলের সঙ্কটে যেমন মানুষ কষ্ট পেয়েছিল এবার কোরবানিতে যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান তিনি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ—সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, এম এ রাজ্জাক খান রাজ, পরিচালক আবু মোতালেব, হারুন অর রশিদ, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবলু প্রমুখ।